ফরিদপুরে ইজিবাইক চালক শওকত মোল্লা হত্যার মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাজেশ রবি দাস আদালত চত্বরে স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বৃহস্পতিবার দুপুরে রায় ঘোষণার পর আদালত ভবন থেকে আসামিদের ডাণ্ডাবেড়ি পরিয়ে পুলিশ ভ্যানে তোলার সময় এই দৃশ্য দেখা যায়। আদালতের সিঁড়ি থেকে গাড়ির দূরত্ব অতিক্রমের মাঝপথে স্ত্রীকে সামনে দেখে রাজেশ থেমে যান। এরপর স্ত্রী কাছে এলে তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে অঝোরে কান্না করেন। পুলিশ বাধা দিলে তিনি উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। পরে পুলিশ তাকে এবং অন্য আসামিদের ভ্যানে তুলে জেলা কারাগারে নিয়ে যায়।
এর আগে অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মাকসুদুর রহমান ইজিবাইক চালক শওকত মোল্লা হত্যায় পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন ফরিদপুর শহরের রবিদাস পল্লির রাজেশ রবি দাস (২৯), পশ্চিম খাবাসপুরের মো. মেহেদী আবু কাওসার (২৫), মো. জনি মোল্লা (৩০), মো. আবু রাসেল শেখ (২৫) (পলাতক) এবং গোয়ালচামট মহল্লার মো. রবিন মোল্লা (২৫)। এছাড়া রাজবাড়ীর মো. বাদশা শেখকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

২০১৯ সালের ১৪ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টায় শওকত মোল্লা ইজিবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরদিন সকালে শহরের মোল্লা বাড়ি সড়কের ধানক্ষেতে তার গলায় বেল্ট পেঁচানো মরদেহ উদ্ধার হয়। হত্যাকারীরা তার ইজিবাইক ও মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়। নিহতের বাবা আয়নাল মোল্লা কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। পরবর্তী তদন্তে ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।
রায়ের পর সরকারি কৌঁসুলি চৌধুরী জাহিদ হাসান বলেন, “এ রায় সমাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।” অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী নারায়ণ চন্দ্র দাস জানান, তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন। আদালত প্রাঙ্গণে স্ত্রীকে জড়িয়ে আসামির কান্নার দৃশ্য সবাইকে আবেগাপ্লুত করেছে।