আম্মু ওঠো… আম্মু ওঠো! মায়ের কফিন জড়িয়ে যমজ দুই শিশুর এই কান্নায় কাঁপছিল পুরো এলাকা।

screenshot 2025 07 30 173705

মায়ের কফিনের পাশে দাঁড়িয়ে বারবার ডেকেও কোনো সাড়া পায়নি মাত্র ৮ বছরের দুই শিশু আরিয়ান আর আয়ান। চুয়াডাঙ্গায় ফারিয়া তাসনিম জ্যোতির দাফনের সময়, সেই করুণ দৃশ্য দেখে উপস্থিত সবাই চোখের জল ধরে রাখতে পারেনি।

৩৬ ঘণ্টা আগে, গাজীপুরের টঙ্গীতে খোলা ম্যানহোলে পড়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন ফারিয়া তাসনিম জ্যোতি। দুইদিন ধরে স্বজনরা মরিয়া হয়ে খোঁজ করছিলেন তাকে। কিন্তু মঙ্গলবার সকালে যখন তার নিথর দেহ উদ্ধার হলো, তখনই শেষ হয়ে গেল যমজ দুই সন্তানের স্নেহময়ী মায়ের গল্প।

মঙ্গলবার রাত ৯টায় চুয়াডাঙ্গার বাগানপাড়ায় জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। কিন্তু সেই সময়ের দৃশ্য ছিল হৃদয়বিদারক। ছোট্ট দুই সন্তান মায়ের কফিন জড়িয়ে অঝোরে কাঁদছিল, বারবার বলছিল— “আম্মু ওঠো… আম্মু ওঠো!”

রা জানত না, শতবার ডেকেও যে মা আর কোনোদিন উঠবে না। স্বজনদের আহাজারি, শিশুদের কান্না— সব মিলিয়ে শোকে ভারী হয়ে ওঠে পুরো পরিবেশ। চারদিকের মানুষও ভেঙে পড়েছিল সেই করুণ দৃশ্য দেখে।

ফারিয়া তাসনিম জ্যোতি ছিলেন চুয়াডাঙ্গার বাগানপাড়ার মেয়ে। ঢাকায় একটি ওষুধ কোম্পানিতে ন্যাশনাল সেলস ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। স্বামী সংসারের ভার একা কাঁধে নিয়ে দুই ছেলেকে মানুষ করছিলেন তিনি।

তার বড় ভাই শোভন বলেন, “আমার বোন সারা জীবন সংগ্রাম করে সংসার চালিয়েছে। একটাই স্বপ্ন ছিল— ছেলেদের মানুষ করবে। এখন ওরা শুধু মাকে খুঁজছে।

এই মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। শেষ বিদায় জানাতে শত শত মানুষ ভিড় করেছিলেন। সহকর্মী থেকে আত্মীয়, সবাই চোখ ভেজাচ্ছিল শুধু একটাই দৃশ্য দেখে— মায়ের কফিনের পাশে যমজ দুই শিশুর অসহায় কান্না।

দুটি শিশু আজও জানে না, তাদের মা আর কোনোদিন ফিরে আসবে না। জীবনের নিষ্ঠুরতা এভাবে যখন শিশুদের কোল থেকে মাকে ছিনিয়ে নেয়, তখন আমরা সবাই নির্বাক হয়ে যাই।

আসুন আমরা সবাই মিলে এই পরিবারের জন্য দোয়া করি, আর ছোট্ট এই দুই শিশুর ভবিষ্যতের জন্য যেন সবাই এগিয়ে আসে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *