আপডেট: ৯ আগস্ট ২০২৫, শনিবার | প্রকাশক: বাংলা নিউজ স্টেশন

এক বছর কেটে গেছে কলকাতার আর. জি. কর মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক মৌমিতা দেবনাথ হত্যাকাণ্ডের পর। ৩১ বছর বয়সী এই তরুণ চিকিৎসককে গত বছরের ৯ আগস্ট রাতে নির্মমভাবে ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়। আজও সেই ঘটনার বিচার হয়নি, যা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছে চিকিৎসক সমাজ ও সাধারণ মানুষ।
২০২৪ সালের ৯ আগস্ট, টানা ৩৬ ঘণ্টা ডিউটির পর মৌমিতা দেবনাথ সেমিনার রুমে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। সেখানেই অজ্ঞাতপরিচয় এক বা একাধিক ব্যক্তি তাঁকে যৌন নিপীড়নের পর হত্যা করে।
পোস্টমর্টেম রিপোর্টে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য—
- গলা চেপে ধরা ও শ্বাসরোধের কারণে মৃত্যু
- চোখের মণি দিয়ে রক্তক্ষরণ
- শরীরে ১১৩টি কামড়ের দাগ
- যৌনাঙ্গে গুরুতর আঘাত
- ১৫০ গ্রাম রক্ত ও বডিলি ফ্লুইডে মিশ্রিত সিমেন, যা একাধিক ব্যক্তির সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত বহন করে
ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও কিছু প্রভাবশালী মহল এটিকে “আত্মহত্যা” বলে চালানোর চেষ্টা করে। প্রমাণ গোপন, সিসিটিভি ফুটেজ অদৃশ্য হয়ে যাওয়া, এবং ফরেনসিক রিপোর্ট দেরিতে আসা—সব মিলিয়ে তদন্তের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।
ঘটনার পর থেকেই চিকিৎসক সমাজ আন্দোলনে নামে। রোগী সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রেখে রাস্তায় নামেন চিকিৎসকেরা। সাধারণ মানুষও সোশ্যাল মিডিয়ায় #JusticeForMoumita এবং #বিচারহীন_৩৬৫_দিন হ্যাশট্যাগে প্রতিবাদ চালিয়ে যায়।
আজও মামলার মূল অভিযুক্তদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার হয়নি বলে অভিযোগ। তদন্তে গাফিলতি, রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রশাসনিক উদাসীনতাকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগীর পরিবার ও আন্দোলনকারীরা।
মৌমিতার পরিবারের সদস্যরা বলেন—
“আমরা শুধু চাই, যারা এই নৃশংসতা করেছে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি হোক। এক বছর হয়ে গেল, কিন্তু আমরা ন্যায়বিচারের আলো দেখিনি।”
এই মামলার ধীর তদন্ত ও বিচারহীনতা এক ভয়ঙ্কর দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, দ্রুত বিচার না হলে অপরাধীরা আরও সাহসী হয়ে উঠবে এবং কর্মক্ষেত্রে নারীর নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে পড়বে।