রাজধানীর রায়েরবাজার কবরস্থানে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের গণকবর উন্নয়নকাজে নিম্নমানের ইট ব্যবহারের অভিযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। এ সময় তিনি দোষী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বাদ দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন।
শনিবার সকালে শহীদদের কবর জিয়ারতের জন্য রায়েরবাজার কবরস্থানে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। সেখানে গিয়ে তিনি নির্মাণকাজে ব্যবহৃত ইটের মান পরীক্ষা করে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। তিনি বলেন, “শহীদদের কবরের ওপর আপনারা কীভাবে নিম্নমানের ইট ব্যবহার করতে পারেন? এটা কীভাবে মেনে নেওয়া যায়?”
ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি হাতে ইট তুলে দেখান এবং প্রকৌশলীকে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন ছুড়ে দেন, “এটা কি এক নম্বর ইট? এই ইটের মান দেখে কি বোঝা যায় এটি এক নম্বর?” ঠিকাদারের প্রতিনিধি তখন দাবি করেন ইটগুলো ভালো মানের। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উপদেষ্টা বলেন, “সব সরিয়ে ফেলুন। ভালো মানের ইট দিন। শহীদদের কবরের কাজে দুই নম্বর ইট লাগানো হবে না।”
এ সময় তিনি নির্বাহী প্রকৌশলীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনি একজন প্রকৌশলী হয়েও এটা কীভাবে বুঝতে পারলেন না? এত নিম্নমানের ইট লাগানো হচ্ছে অথচ আপনি চুপ করে আছেন!”
তিনি আরও বলেন, “আমি যদি এখানে না আসতাম, তাহলে তো আপনারা এগুলো লাগিয়েই দিতেন। এটা শহীদদের অসম্মান। এত দুর্নীতি করলে দেশ কীভাবে চলবে? খালি চুরি ছাড়া আর কিছু নাই।”
ঠিকাদারকে বাদ দেওয়ার নির্দেশ
ঘটনার সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা নির্মাণকাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারকে তাৎক্ষণিকভাবে বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, “এই কন্ট্রাক্টরকে চেঞ্জ করুন। ভালো মানের কাজ না করলে শহীদদের প্রতি এটা অন্যায়।”
প্রকৌশলীর ব্যাখ্যা
ঢাকা উত্তর সিটির অঞ্চল-৫–এর নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, “কাজটি বৃহস্পতিবার শুরু হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে এক ট্রাক ইট আনা হয়। এর মধ্যে কিছু নিম্নমানের ইট ছিল, যা সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এখন নতুন ঠিকাদার দিয়ে কাজ করানো হবে।”
শহীদদের প্রতি অবমাননা নয়
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “জুলাই আন্দোলনের ১১৪ শহীদের সম্মানে এই গণকবরের উন্নয়ন কাজ হচ্ছে। এখানে নিম্নমানের কোনো কাজ বরদাস্ত করা হবে না। শহীদদের প্রতি অবমাননা সহ্য করা হবে না।”