দক্ষিণী সুপারস্টার ধানুশ এবং বলিউডের উদীয়মান নায়িকা ম্রুণাল ঠাকুরকে ঘিরে বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনা চলছে। তাদের একসঙ্গে একাধিক অনুষ্ঠানে উপস্থিতি ও ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি-ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় নেটিজেনদের মধ্যে প্রেমের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও দুজনের কেউই এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু স্বীকার করেননি, তবুও বলিউড ও টলিউডের ভক্তদের কৌতূহল এখন তুঙ্গে।

গুঞ্জনের সূত্রপাত ঘটে ম্রুণালের জন্মদিনের পার্টি থেকে। গত ১ আগস্ট মুম্বাইয়ে অনুষ্ঠিত সেই পার্টিতে ধানুশকে দেখা যায় অতিথিদের মধ্যে। পার্টির একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়, যেখানে দেখা যায় ধানুশ ও ম্রুণাল হাত ধরে গল্প করছেন এবং পরস্পরের খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে আছেন। এ দৃশ্য মুহূর্তেই অনুরাগীদের নজর কাড়ে।
এর আগে ধানুশকে দেখা গেছে ম্রুণালের অভিনীত ‘সন অফ সরদার ২’ সিনেমার বিশেষ প্রদর্শনীতে। প্রিমিয়ারের রেড কার্পেটে দুজনের আলিঙ্গন এবং ঘনিষ্ঠভাবে কথা বলার দৃশ্য নতুন করে প্রেমের জল্পনাকে উসকে দেয়।
ফ্যানদের মধ্যে দ্বিমত দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, “ধানুশ ও ম্রুণাল একে অপরের সঙ্গে দারুণ মানানসই।” আবার কেউ কেউ মনে করছেন, এটা হয়তো নিছক বন্ধুত্ব কিংবা সিনেমা প্রচারের কৌশল।

ভারতের বিনোদন সংবাদমাধ্যম নিউজ১৮ শোশার একটি প্রতিবেদনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সূত্র জানায়,
“হ্যাঁ, তারা একে অপরকে দেখছেন। তবে সম্পর্কের এখনও শুরুর পর্যায় চলছে। তারা প্রকাশ্যে কিছু বলতে চান না, কিন্তু আড়ালও করছেন না। তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মতে, দুজনের স্বভাব, জীবনযাত্রা এবং কাজের প্রতি মনোভাব খুব মিল।”
অন্যদিকে শোনা যাচ্ছে, ধানুশের আসন্ন ছবি ‘তেরে ইশক মেঁ’-তে কৃতি স্যাননের সঙ্গে কাজ করার সময়ই ম্রুণালের সঙ্গে তার পরিচয় করিয়ে দেন কৃতি। যদিও ম্রুণাল ছবিটিতে থাকবেন বলে শোনা গেলেও পরে তিনি তা করেননি। কিন্তু সেই সময়ের থেকেই নাকি তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব তৈরি হয়, যা পরবর্তীতে আরও গভীর হয়েছে।
ধানুশ আগে ছিলেন রজনীকান্তের মেয়ে ঐশ্বরিয়া রজনীকান্তের স্বামী। ২০০৪ সালে তাদের বিয়ে হয় এবং দীর্ঘ ১৮ বছরের দাম্পত্য জীবনে তাদের দুটি সন্তান রয়েছে—যাত্রা ও লিঙ্গা। তবে ২০২২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। বিচ্ছেদের পর থেকে ধানুশ একাই ছিলেন, কিন্তু সাম্প্রতিক এই গুঞ্জন তার জীবনে নতুন রঙ এনেছে বলে ভক্তরা মনে করছেন।
‘সীতা রমম’ ছবির মাধ্যমে বিপুল জনপ্রিয়তা পাওয়া ম্রুণালও তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সবসময় নীরব থেকেছেন। ধানুশের সঙ্গে একাধিকবার প্রকাশ্যে আসার পরও তিনি এ বিষয়ে মুখ খোলেননি। তবে তার নীরবতাই ভক্তদের আরও কৌতূহলী করে তুলছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভক্তদের মন্তব্যে দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ বলছেন,
“ওরা দুজন সত্যিই দারুণ মানিয়ে গেছে। ধানুশের জীবনে নতুন সুখের শুরু হোক।”
অন্যদিকে কেউ বলছেন,
“এটা হয়তো নিছক বন্ধুত্ব, বাড়তি কিছু নয়।”
প্রসঙ্গত, ধানুশ বর্তমানে আনন্দ এল রাইয়ের পরিচালনায় ‘তেরে ইশক মেঁ’ ছবির শুটিং নিয়ে ব্যস্ত, যেখানে তার সহ-অভিনেত্রী কৃতি স্যানন। অন্যদিকে ম্রুণালের সাম্প্রতিক ছবি ‘সন অফ সরদার ২’ ইতিমধ্যে মুক্তি পেয়েছে এবং বক্স অফিসে ভালো সাড়া পাচ্ছে। তবুও সময় বের করে তারা একে অপরের সঙ্গে দেখা করছেন বলে জানা গেছে।
বলিউডে তারকাদের ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে গুঞ্জন নতুন কিছু নয়। তবে ধানুশ ও ম্রুণালের সম্পর্কের বিষয়টি ভক্তদের কাছে বেশি আকর্ষণীয় কারণ তারা দুই ভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় মুখ। দক্ষিণী সিনেমার তারকা ধানুশ এবং বলিউডের নতুন সেনসেশন ম্রুণালের এই জুটি যদি সত্যিই গড়ে ওঠে, তবে এটি নিঃসন্দেহে ভক্তদের জন্য হবে চমকপ্রদ এক খবর।
যদিও দুজনের কেউই এখনও সম্পর্ক নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি, তবে তাদের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তগুলোই ইঙ্গিত দিচ্ছে অন্যকিছু। সময়ই বলে দেবে, ধানুশ ও ম্রুণালের সম্পর্ক নিছক বন্ধুত্বের সীমায় থাকে কিনা, নাকি সত্যিই নতুন এক প্রেমকাহিনির জন্ম হয় বলিউড-টলিউডে।