ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদে পড়ে ৮০ বছরের বৃদ্ধ খোয়ালেন ৯ কোটি রুপি, হাসপাতালে ভর্তি

আপডেটেড: ৯ আগস্ট ২০২৫ | প্রকাশনায়: বাংলা নিউজ স্টেশন

ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদে পড়ে ৮০ বছরের বৃদ্ধ খোয়ালেন ৯ কোটি রুপি, হাসপাতালে ভর্তি, বাংলা নিউজ স্টেশন, bangla news station
ছবিঃ সংগৃহীত, বাংলা নিউজ স্টেশন

ভারতের মুম্বাইয়ে ৮০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধের জীবনে ঘটে গেছে ভয়াবহ এক সাইবার জালিয়াতির ঘটনা। ফেসবুকের প্রেমের ফাঁদে পড়ে তিনি হারিয়েছেন তার জীবনের সমস্ত সঞ্চয়—মোট ৯ কোটি রুপি। এমনকি মানসিক ধাক্কা সামলাতে না পেরে বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে ফেসবুকে ‘শার্ভি’ নামে এক নারীর সঙ্গে বন্ধুত্বের সূত্রপাত হয় বৃদ্ধের। এরপর ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। শার্ভি জানায়, সে তার স্বামী থেকে আলাদা এবং সন্তানদের নিয়ে থাকে। কিছুদিনের মধ্যেই সেই ‘নারী’ বিভিন্ন অজুহাতে টাকার জন্য অনুরোধ করতে শুরু করে—সন্তানদের অসুস্থতা, চিকিৎসা খরচ, প্রাত্যহিক সমস্যা ইত্যাদি।

এরপর একে একে আরও তিন নারীর আগমন ঘটে বৃদ্ধের জীবনে—‘কবিতা’, ‘দিনাজ’ ও ‘জেসমিন’। এরা প্রত্যেকেই নিজেকে শার্ভির পরিচিত বা আত্মীয় বলে পরিচয় দেয় এবং বন্ধুত্ব বা সহানুভূতির নামে টাকা দাবি করতে থাকে। কবিতা অশ্লীল বার্তা পাঠিয়ে ব্ল্যাকমেইলের মাধ্যমে অর্থ আদায় করে, দিনাজ দাবি করে শার্ভি মারা গেছে এবং হাসপাতালের বিল পরিশোধে টাকা চায়। এমনকি চ্যাটের স্ক্রিনশট পাঠিয়ে বৃদ্ধকে মানসিকভাবে চাপে ফেলে। জেসমিন আবার দিনাজের বন্ধু পরিচয়ে এসে নতুন করে সাহায্য চায়।

এই প্রতারণা চলে টানা দুই বছর ধরে—২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে বৃদ্ধ ৭৩৪টি অনলাইন লেনদেনে ৮ কোটি ৭০ লাখ রুপি পাঠিয়ে দেন। শেষ পর্যন্ত নিজের সব সঞ্চয় শেষ হলে তিনি পুত্রবধূ ও ছেলের কাছ থেকেও ধার করে দেন আরও কয়েক লাখ টাকা।

শেষমেশ যখন তিনি বুঝতে পারেন প্রতারণার শিকার হয়েছেন, তখন মানসিকভাবে এতটাই ভেঙে পড়েন যে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। চিকিৎসকরা জানান, তার ডিমেনশিয়ার লক্ষণ দেখা দিয়েছে। এই বছরের ২২ জুলাই বৃদ্ধ সাইবার ক্রাইম বিভাগে একটি মামলা করেন। পুলিশ ধারণা করছে, চার নারীর নাম ব্যবহার করলেও প্রকৃতপক্ষে প্রতারক একজনই।

এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে, সোশ্যাল মিডিয়াতে সম্পর্ক গড়ার ক্ষেত্রে কতটা সচেতন হওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে বয়স্ক নাগরিকদের প্রযুক্তি ব্যবহারে আরও সচেতনতা ও পারিবারিক নজরদারির প্রয়োজন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *