বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনর সময় মিছিলে গিয়ে কারাবন্দী হওয়া ১৮৮ প্রবাসী দেশে ফিরলেন

banglanewsstation, bangla news station, boishommobirodi chatro andolonon, saudi arab probashi

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সংহতি জানাতে গিয়ে কারাবন্দী হওয়া ১৮৮ জন প্রবাসী অবশেষে দেশে ফিরেছেন। গত বছরের জুলাই-আগস্টে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু থেকে বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীরা রাজপথে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও সমাবেশে অংশ নেন। বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে প্রবাসীরা আন্দোলনের পক্ষে মিছিলে নামলে দেশটির কঠোর আইনের কারণে বহুজনকে গ্রেপ্তার হয়ে কারাভোগ করতে হয়।

ঝুঁকি জেনেও মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপ, আমেরিকা এবং এশিয়ার বিভিন্ন দেশে প্রবাসীরা আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানাতে রাজপথে নেমেছিলেন। লন্ডনের ট্রাফালগার স্কয়ার, নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ার, প্যারিসের রিপাবলিক স্কয়ার, টোকিও, সিউলসহ বিশ্বব্যাপী প্রবাসীরা গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে স্লোগান দেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুমতি ছাড়া বিক্ষোভে অংশ নেয়ায় প্রথমে ৫৭ জনকে আটক করা হয়। পরে আরও কয়েক দফায় গ্রেপ্তার হয় অনেকেই। আদালত ৫৩ জনকে ১০ বছর, তিনজনকে যাবজ্জীবন ও একজনকে ১১ বছরের সাজা দেন। তবে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সরাসরি আমিরাতের প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের কাছে ক্ষমার অনুরোধ জানান। তাঁর অনুরোধে ধাপে ধাপে মুক্তি পান আটক প্রবাসীরা।

প্রবাসীদের সম্মাননা

আজ শনিবার (২ আগস্ট) রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে প্রবাসীদের সম্মান জানাতে পালিত হচ্ছে ‘রেমিট্যান্স যোদ্ধা দিবস’। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে আন্দোলনে অবদান রাখা প্রবাসীদের অভিজ্ঞতা শোনানো হবে। পাশাপাশি রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের ভূমিকা নিয়ে তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হবে।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, “গণঅভ্যুত্থানে প্রবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। যাঁরা ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন, চাকরি হারিয়েছেন বা কারাবন্দী হয়েছেন, তাঁদের বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হচ্ছে।”

সহায়তা ও পুনর্বাসন

মধ্যপ্রাচ্য থেকে ফিরে আসা প্রবাসীদের পুনর্বাসনে সহজ শর্তে ঋণ, ব্যবসা সহায়তা এবং অর্থ অনুদান দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। গত বছর ১৮৬ জন প্রবাসীকে নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছিল।

ফেরত আসা প্রবাসীদের একজন নোয়াখালীর মো. ইয়াছিন বলেন, “আমিরাতে ব্যবসা ছিল, আন্দোলনের কারণে কারাবন্দী হতে হয়েছে। মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরে এলেও বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। সরকার যদি ঋণ দেয়, দেশে ব্যবসা শুরু করব।”

সরকার জানিয়েছে, এখনো আমিরাতের কারাগারে প্রায় ২৩ জন বাংলাদেশি প্রবাসী রয়েছেন। তাঁদের মুক্তির জন্যও কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *