ঠাকুরগাঁও, ৯ আগস্ট ২০২৫

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় সাপের কামড়ে ১২ বছর বয়সী স্কুলছাত্র সাকিবুল ইসলাম খোকার মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বাড়ির পাশে দোকানে সাপের কামড় খাওয়ার পর দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় অ্যান্টিভেনম না থাকায় সাকিবুল শেষ পর্যন্ত জীবিত থাকলেন না।
সাপের কামড় এবং চিকিৎসার বাস্তবতা
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাকিবুল উপজেলার বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের বাদামবাড়ী কদমতলা গ্রামের ইসরাইল উদ্দীনের ছেলে এবং বড়পলাশবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র। ওইদিন বিকেলে ফোন চালাতে গিয়ে দোকানের ছাউনি থেকে বের হয়ে আসা বিষধর সাপ তাকে কামড় দেয়। প্রথমে সে বেদনাকে বুঝতে না পারলেও পরে বাড়ির লোকজন পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক সাপের কামড় শনাক্ত করেন।
এরপর সাকিবুলকে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে অ্যান্টিভেনম না থাকার কারণে তাকে ঠাকুরগাঁও জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে অ্যান্টিভেনমের অভাবে তাকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। পথে দিনাজপুর যাওয়ার সময় সাকিবুলের মৃত্যু হয়।
অ্যান্টিভেনম সংকটের কারণ ও প্রভাব
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাকিলা আক্তার জানান, বর্তমানে দেশে অ্যান্টিভেনমের সরবরাহ বাধাগ্রস্ত। আগে অপারেশন প্ল্যান থেকে সরবরাহ পাওয়া যেত, কিন্তু এখন সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। সরকারকে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা কিনবেন না কিনে দেওয়া হবে কি না। এ পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় চাহিদা পাঠানো হয়েছে।
বালিয়াডাঙ্গী থানার ওসি শওকত আলী সরকার কালবেলাকে জানান, এ ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।
গ্রামের মানুষ মর্মাহত হয়ে বলেছেন, সাপের কামড়ের মতো দুর্ঘটনায় যথাযথ চিকিৎসা না পেয়ে প্রাণ হারানো অমূল্য। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার এই সংকট যেন আর কখনো না ঘটে সে জন্য সরকারের তৎপরতা কামনা করছেন তারা।
রিপোর্ট: বিশেষ প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও
আপডেট: ৯ আগস্ট ২০২৫