ঢাকা: উড়োজাহাজের অনলাইন টিকিট বুকিং প্ল্যাটফর্ম ‘ফ্লাইট এক্সপার্ট’ হঠাৎ করেই কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন অগ্রিম টিকিট কেটে রাখা হাজারো গ্রাহক ও অসংখ্য ট্রাভেল এজেন্সি।
শনিবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাজধানীর মতিঝিলে ফ্লাইট এক্সপার্টের অফিসে গিয়ে দেখা যায়, ভিড় জমিয়েছেন বিপাকে পড়া এজেন্সি মালিক ও গ্রাহকরা। তাদের অভিযোগ, কোটি কোটি টাকার টিকিট এখন অনিশ্চয়তার মুখে।
গ্রাহকদের অভিযোগ
ইউনিয়ন ট্রাভেলস নামের এক এজেন্সির মালিক কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,
“সব শেষ হয়ে গেল ভাই। ২৫-৩০ লাখ টাকা আটকে গেছে। সব টিকিট ফ্লাইট এক্সপার্টের মাধ্যমে কেটেছিলাম। এখন শুনছি এগুলো অন্য এজেন্সির মাধ্যমে নেওয়া হয়েছিল।”
কীভাবে জনপ্রিয় হয়েছিল প্ল্যাটফর্মটি
২০১৭ সালে যাত্রা শুরু করা ফ্লাইট এক্সপার্ট দেশি-বিদেশি উড়োজাহাজের টিকিট বুকিং, হোটেল রিজার্ভেশন, ভিসা ও ট্যুর প্যাকেজ সেবা দিত। স্বল্পমূল্যে সহজ বুকিং সুবিধার কারণে প্ল্যাটফর্মটি দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করে।
অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব
প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানান, ফ্লাইট এক্সপার্ট মূলত দুইটি মধ্যস্থতাকারী এজেন্সির মাধ্যমে টিকিট সংগ্রহ করত। এখন সেই এজেন্সিগুলো টিকিট রিফান্ড করে অর্থ তুলে নিচ্ছে।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি স্ক্রিনশটে ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সালমান বিন রশিদ অভিযোগ করেন,
“প্রতিষ্ঠানের দুই কর্মকর্তা তিন কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। হুমকি ও অপবাদের কারণে আমি অফিস বন্ধ করে দেশ ছাড়ছি।”
তবে হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ করলে সালমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
“গ্রাহকরা টাকা দেওয়ার পরপরই টিকিট পেয়েছেন। এখানে কারও টাকা হারানোর সুযোগ নেই। সাঈদ আহমেদ টিকিট রিফান্ড করতে বলায় জটিলতা তৈরি হয়েছে।”
কর্মকর্তাদের পাল্টা বক্তব্য
ফ্লাইট এক্সপার্টের হেড অব কমার্শিয়াল সাঈদ আহমেদ বলেন,
“মালিকপক্ষই টাকা নিয়ে বিদেশে চলে গেছে। এখন অসংখ্য গ্রাহক ও এজেন্সি কোটি কোটি টাকার টিকিট নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।”
তিনি মতিঝিল থানায় সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছেন বলে জানান।
পুলিশের অবস্থান
মতিঝিল থানার দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অফিস বন্ধ, মালিক নিখোঁজ
মতিঝিল সিটি সেন্টারের নিরাপত্তাকর্মীরা জানান, সালমান বিন রশিদ নিয়মিত অফিসে আসলেও গত তিন দিন ধরে অফিসে আসেননি।