প্রকাশিত: শনিবার, ৯ আগস্ট ২০২৫

শেরপুরের শ্রীবরদীতে অসুস্থ স্ত্রীকে মাটিতে পুঁতে ফেলার চেষ্টার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। ঘটনাটি প্রথমে দেখে অনেকেই বৃদ্ধ স্বামীর কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছিলেন। তবে সরেজমিনে গিয়ে পাওয়া তথ্য চিত্র পুরোপুরি ভিন্ন—এই ভিডিও আসলে নাতির ‘ভিউ ব্যবসা’র অংশ বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার (৯ আগস্ট) বিকেলে, শ্রীবরদীর কাকিলাকুড়া ইউনিয়নের খোশালপুর কানিপাড়া গ্রামে। প্রায় ১০ বছর ধরে শয্যাশায়ী স্ত্রী খোরশেদার সেবা করে আসছিলেন ওই এলাকার বৃদ্ধ খলিলুর রহমান। স্ত্রীকে প্রাকৃতিক কাজ সারতে সুবিধা দিতে তিনি একটি প্লাস্টিকের কমোড চেয়ারের ব্যবস্থা করেন। চেয়ারের জন্য উঠানে একটি গর্ত খোঁড়ার সময় হঠাৎ স্ত্রী বিছানায়ই মলত্যাগ করলে রাগের বশে তিনি তাকে টেনে গর্তের কাছে নিয়ে যান।
এ দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করেন তাদের নাতি খোকন মিয়া। স্থানীয়দের দাবি, খোকন ঘটনাটি থামানোর পরিবর্তে নানা প্ররোচনা দেন এবং ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। ভিডিওটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়, সৃষ্টি হয় চাঞ্চল্য।
পরে বৃদ্ধার চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে তাকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেন। অনেকেই জানান, খলিলুর বছরের পর বছর স্ত্রীকে গোসল করানো, খাওয়ানোসহ সব দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু দীর্ঘদিনের মানসিক চাপ ও শারীরিক কষ্টে তিনি বিপর্যস্ত হয়ে এমন আচরণ করে থাকতে পারেন।
খলিলুর রহমানের বক্তব্য
“আমি ছাড়া আমার স্ত্রীর আর কেউ নেই। এত বছর ধরে সেবা করেছি। সেদিন হঠাৎ রাগে ভুল করেছি, আমি খুবই অনুতপ্ত,” বলেন বৃদ্ধ খলিলুর।
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া
শ্রীবরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাবের হোসেন বলেন, “সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘটনাটি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে, তা অনেকটাই বিভ্রান্তিকর। খলিল তার স্ত্রীকে দীর্ঘদিন সেবা করেছেন। তবে মানসিক চাপে এমন কিছু ঘটে থাকতে পারে। আমরা দম্পতিকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করছি।”
উল্লেখ্য, বৃদ্ধ দম্পতির তিন সন্তানের মধ্যে এক ছেলে ও এক মেয়ে প্রবাসে থাকেন, অপর মেয়ে অন্ধ এবং রাজধানীতে ভিক্ষাবৃত্তি করেন।