
রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় চার সন্তানের জননী ফাহমিদা তাহসিন কেয়া (২৫)-এর রহস্যজনক মৃত্যু। পলাতক স্বামী সিফাত আলীসহ নয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছে নিহতের পরিবার।
রাজধানীর মিরপুরের পশ্চিম শেওড়াপাড়ায় চার সন্তানের জননী ফাহমিদা তাহসিন কেয়া (২৫)-এর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। নিহতের স্বামী সিফাত আলী (৩০) এবং তাঁদের গাড়িচালকসহ নয়জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন কেয়ার মা নাজমা বেগম।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট ২০২৫) দুপুরে মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজ্জাদ রোমান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে রুজু হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান চলছে।
নিহত কেয়ার ফুফু সৈয়দা ফাতেমা জাহান কলি জানান—
বুধবার রাত ২টার দিকে সিফাত তাঁর শাশুড়ি নাজমা বেগমকে ফোন দিয়ে বলেন,
“কেয়া খুব অসুস্থ, আপনারা দ্রুত বাসায় আসেন।”
জিজ্ঞেস করলে একপর্যায়ে স্বীকার করেন,
“কেয়া আর বেঁচে নেই।”
পরিবার দ্রুত বাসায় ছুটে গিয়ে দেখেন, সিফাত কেয়াকে নিয়ে পান্থপথের বিআরবি হাসপাতালে যাচ্ছেন। সেখানে চিকিৎসক কেয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর সিফাত আলী সেখান থেকে উধাও হয়ে যান।
নিহতের বাবা রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, সিফাত দীর্ঘদিন ধরে মেয়েকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন, এমনকি সন্তানদের সামনেও মারধর করতেন।
তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন—
“কয়েকদিন আগে কেয়া বলেছিল, সে আর সংসার করতে চায় না। আমরা বুঝিয়ে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। আজ ভুলের খেসারত মেয়েটা দিয়ে গেলো।”
রফিকুলের দাবি, কেয়াকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহে গলায় দাগও দেখেছেন তাঁরা।
মিরপুর মডেল থানার ওসি সাজ্জাদ রোমান বলেন—
“এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা এখনো নিশ্চিত নয়। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্টের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুলিশ জানায়, আসামিরা এখনো পলাতক এবং তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
ফাহমিদা তাহসিন কেয়া স্বামী-সন্তান নিয়ে পশ্চিম শেওড়াপাড়ার অনামিকা কনকর্ড অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন। তাঁর চার সন্তান—এক মেয়ে ও তিন ছেলে। বড় মেয়ে ভিকারুননিসা স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে।