রোববার, ২৪ আগস্ট ২০২৫

চচকরিয়া থানার হাজতে এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। নিহতের নাম দুর্জয় চৌধুরী (২৭), যিনি চকরিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে থানার ওসি শফিকুল ইসলামসহ চার পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
শনিবার (২৩ আগস্ট) রাতে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। প্রত্যাহার হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন— থানার ওসি শফিকুল ইসলাম, এএসআই হানিফ মিয়া এবং দুই কনস্টেবল। তাঁদের জেলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
তদন্ত কমিটি গঠন
ঘটনার পর অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিনকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে চকরিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিৎ দাশ ও কোর্ট ইন্সপেক্টর আনোয়ার উল ইসলাম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
এছাড়া, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক স্বাক্ষরিত অপর এক প্রজ্ঞাপনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রাবেয়া খানমকে ওএসডি করা হয়েছে। এ বিষয়ে আলাদা একটি তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, যাদেরকে তিন দিনের মধ্যে সরেজমিন তদন্ত করে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
চিরকুট উদ্ধার
সহকারী পুলিশ সুপার অভিজিৎ দাশ জানান, দুর্জয়ের প্যান্টের পকেট থেকে দুটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত চিরকুটের বিষয়বস্তু প্রকাশ করা হয়নি।
অভিযোগ ও পারিবারিক দাবি
প্রধান শিক্ষকের অভিযোগের ভিত্তিতে ২১ আগস্ট রাতে দুর্জয়কে আটক করে থানায় আলাদা কক্ষে রাখা হয়। অভিযোগ ছিল, তিনি বিদ্যালয়ের ২ লাখ ৮৩ হাজার টাকা আত্মসাত করেছেন। পুলিশ দাবি করেছে, সেদিন রাতে তিনি আত্মহত্যা করেন।
তবে সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, রাত ১২টা ৪২ মিনিট থেকে ১টা ২২ মিনিট পর্যন্ত তিনি চারবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এরপর তিনি ক্যামেরার বাইরে চলে যান। অন্যদিকে, স্বজনদের দাবি— দুর্জয়কে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের ফলে মৃত্যু হয়েছে।
প্রতিবাদ ও আন্দোলন
এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে চকরিয়া কেন্দ্রীয় কালীমন্দির দুর্গাপূজা কমিটির উদ্যোগে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। তারা দাবি জানান— দুর্জয়ের মৃত্যুর সঠিক তদন্ত ও দায়ীদের বিচারের।