আ.লীগ আমলেও এমন হয়নি, সরকারের দায় নিতে হবে

ঢাকা, ৩১ আগস্ট ২০২৫, রবিবার

nurul haq nur hospital attack august 2025

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর সাম্প্রতিক হামলা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেও এ ধরনের বর্বর হামলার নজির নেই। বর্তমান সরকারের আমলে যে ঘটনা ঘটেছে, তার পূর্ণ দায় সরকারকেই নিতে হবে।”

এ নিয়ে আজ দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। আসিফ মাহমুদ জানান, নুরুল হক নুরকে দেখতে তিনি হাসপাতালে গিয়েছিলেন এবং সেখান থেকেই সরকারের বিরুদ্ধে তার ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

উপদেষ্টা আসিফ অভিযোগ করেন যে, জাতীয় পার্টির ভেতর দিয়ে আবারও আওয়ামী লীগকে ফেরানোর পরিকল্পনা চলছে। তার দাবি, একসময় “রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ” নামে নতুন করে ক্ষমতায় ফেরার একটি প্রচেষ্টা চালানো হলেও তা ব্যর্থ হয়েছে। তাই বর্তমানে জাতীয় পার্টির ভেতর দিয়ে আওয়ামী লীগকে পুনরায় বৈধতা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

তিনি বলেন,
“জাতীয় পার্টি হচ্ছে চিহ্নিত ফ্যাসিবাদী দল। আমরা অতীতে দেখেছি, তারা বারবার আওয়ামী লীগের ফ্যাসিবাদী সংসদকে বৈধতা দিয়েছে। ভারত থেকে প্রেসক্রিপশন এনে বাংলাদেশে একটি কৃত্রিম সংসদ গঠন করেছে এবং কৃত্রিম গণতন্ত্র দেখিয়েছে।”

Ad Page

আসিফ মাহমুদ আরও স্পষ্ট করে বলেন, জনগণ আর এই ধরনের ষড়যন্ত্র মেনে নেবে না।
তার ভাষায়—
“চিহ্নিত ফ্যাসিবাদীদের যদি আবার কোনোভাবে সমর্থন দেওয়ার চেষ্টা হয় অথবা সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করা হয়, তাহলে জনগণের পক্ষ থেকে ফ্যাসিবাদবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াবে।”

তিনি মনে করেন, গণঅধিকার পরিষদের ওপর হামলা শুধু একটি রাজনৈতিক ঘটনা নয়, বরং এটি বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক স্বাধীনতার জন্য এক বড় হুমকি।

ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নুরুল হক নুরের শারীরিক অবস্থা এখনও স্থিতিশীল নয়। চিকিৎসকরা নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হামলার জন্য দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় না আনা হলে তারা সারাদেশে কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক এ হামলা দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করবে। বিশেষ করে গণঅধিকার পরিষদ, জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে ত্রিমুখী দ্বন্দ্ব আগামীতে আরও তীব্র হতে পারে। এ ধরনের পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটাতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

একজন বিশ্লেষক বলেন,
“জাতীয় পার্টিকে ঘিরে নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হলে সরকারের জন্য তা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। বিশেষ করে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যদি একজোট হয়, তাহলে রাজপথের আন্দোলন আরও জোরদার হবে।”

নুরুল হক নুরের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সরকার ও বিরোধী দলের দ্বন্দ্ব নতুন আকার নিচ্ছে। উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের মন্তব্য স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে, শুধু সরকারের দায় নয়, জাতীয় রাজনীতিতে বড় ধরনের পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ শুরু হতে যাচ্ছে। এখন সবার দৃষ্টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারের পরবর্তী সিদ্ধান্তের দিকে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *