প্রকাশ : বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

হবিগঞ্জের বাহুবলে ১৭ মামলার আসামি জামাল মিয়া (৪০)-কে স্ত্রী ও সন্তানের সামনে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। বুধবার ভোররাতে উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামে এ নৃশংস ঘটনা ঘটে।
নিহত জামাল মিয়া স্থানীয় আব্দুর রহমানের ছেলে। তিনি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে পুলিশের দাবি।
ঘটনার বর্ণনা
নিহতের স্ত্রী জানান, বুধবার ভোর চারটার দিকে ১০-১২ জনের একটি দল তাদের ঘরে প্রবেশ করে। প্রথমে তাকে ঘর থেকে বের করে আনা হয়। এরপর তার স্বামী জামালকে ঘর থেকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়। স্ত্রী ছুটে পালাতে সক্ষম হলেও কিছু দূরে ধানের জমিতে জামালকে ফেলে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
তিনি ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনের নাম প্রকাশ করেছেন, যা তদন্তে কাজে লাগছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশি পদক্ষেপ
এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শিবলু নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। আটক শিবলু উপজেলার মিরপুর বাজার এলাকার বাসিন্দা টেনু মিয়ার ছেলে। তার বিরুদ্ধেও বাহুবল মডেল থানায় ১২টি ডাকাতি মামলা রয়েছে।
বাহুবল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান— নিহত জামালের বিরুদ্ধে থানায় ১৭টি ডাকাতি মামলা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তার পূর্ব শত্রুতার জেরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এলাকায় উত্তেজনা
এ হত্যাকাণ্ডের পর নোয়াগাঁও গ্রামজুড়ে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, নিহত জামাল ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। ফলে এ ঘটনার পর গ্রামবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
মামলার ইতিহাস
নিহত জামাল মিয়ার বিরুদ্ধে ডাকাতি, ছিনতাই ও চুরি-ডাকাতিসহ ১৭টি মামলা রয়েছে। প্রতিটি মামলার তদন্ত চলমান ছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি— তিনি একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের নেতৃত্ব দিতেন।
অপরদিকে, আটক শিবলুর বিরুদ্ধেও ১২টি মামলা রয়েছে। ফলে ঘটনাটি ডাকাত দলের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের ফল হতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
হবিগঞ্জে দিনের পর দিন বাড়তে থাকা অপরাধচক্র ও ডাকাত দলের প্রভাব নিয়ে স্থানীয়রা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পুলিশ বলছে, এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত কারো ছাড় নেই, দ্রুত তাদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।