প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. শাহেদ (২৪) ছুরিকাঘাতের ঘটনায় নিহত হয়েছেন। র্যাব এই ঘটনার মূল অভিযুক্ত হিসেবে তার বাবা নুরুজ্জামান (৬৫) এবং বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, শাহেদ চট্টগ্রাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের সপ্তম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন। সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা থানা এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় র্যাব-৭ তাদের গ্রেপ্তার করে। মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান জানিয়েছেন, হত্যার পর থেকে নুরুজ্জামান পলাতক ছিলেন। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে এবং পুলিশের সহযোগিতায় পাঁচ দিন পরে তাদের ধরা সম্ভব হয়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, শাহেদ তার বাবার দ্বিতীয় বিয়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। ১০ সেপ্টেম্বর মিরসরাই উপজেলার মায়ানী ইউনিয়নের ঘড়ি মার্কেট এলাকায় এই বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষে তর্কের ঘটনা ঘটে। এরপর নিজ বাড়িতে বাবা নুরুজ্জামানের ছুরিকাঘাতে শাহেদ নিহত হন।
নিহতের পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য অনুযায়ী, নুরুজ্জামানের প্রথম স্ত্রী দুই মেয়ে ও এক ছেলেকে নিয়ে চট্টগ্রামের সিডিএ এলাকার একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। পরিবারের অশান্তি ও পারিবারিক দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের বিষয় ছিল বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, শাহেদ ছিলেন মেধাবী ও শান্তপ্রিয় একজন ছাত্র। তার অকালমৃত্যু শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
র্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে Murder Case (হত্যা মামলা) দায়ের করা হয়েছে এবং তারা বর্তমানে রিমান্ডে রয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এ ঘটনায় সমস্ত তথ্য সংগ্রহ করে দ্রুত বিচার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
এ ধরনের ঘটনা সমাজে একটি গুরুতর সতর্কবার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। পারিবারিক বিরোধের কারণে কোনো পরিবারের সন্তানকে ক্ষতি হওয়া উচিত নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পারিবারিক সমস্যা সমাধানে সংলাপ ও আইনি পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে এবং সামাজিক নিরাপত্তা ও পরিবারে শান্তি রক্ষায় গুরুত্ব আরোপ করা হবে। হত্যাকাণ্ডের তদন্ত চলমান থাকায় র্যাব ও পুলিশ সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য উন্মুক্ত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের মাধ্যমে আমরা এই ঘটনার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি, যাতে সমাজের মানুষ বিষয়টি সম্পর্কে সচেতন হতে পারেন। পরিবারে দাম্পত্য বা পারিবারিক বিবাদের কারণে এমন চরম ঘটনাকে প্রতিহত করা সমাজের দায়িত্ব।