🗓️ প্রকাশিত: ১৮সেপ্টেম্বর ২০২৫

পাকিস্তানের Gilgit-Baltistan এর এক দুর্গম পাহাড়ি গ্রামে বড় হওয়া জনপ্রিয় শিশু ইউটিউবার Mohammad Siraj নিজের জীবনকে বদলে দেওয়ার পাশাপাশি বদলে দিচ্ছেন পুরো গ্রামের ভবিষ্যৎ। সিরাজ ও তার বোন Muskan ইউটিউবে কনটেন্ট তৈরি করে অর্জিত আয়ের অর্থ ব্যয় করেছেন গ্রামের শিশুদের শিক্ষার জন্য—আর এর ফলেই গড়ে উঠেছে আধুনিক মানের একটি স্কুল, Zaki Academy।
সিরাজের বাবা Mohammad Taqi জানিয়েছেন, একসময় স্কুলটির অবস্থা ছিল করুণ। শিশুরা খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করত, কারও পরনে জুতো ছিল না, কেউ ইউনিফর্মও পরত না। এমন দুরবস্থায় পরিবার নিয়ে Islamabad চলে যাওয়ার কথা ভাবলেও শেষ পর্যন্ত গ্রামের ভবিষ্যতের জন্য রয়ে যান তারা।
সেই সময় সিরাজ ইউটিউবে জনপ্রিয় হতে শুরু করেন। গ্রামের সৌন্দর্য, সংস্কৃতি আর নির্ভেজাল জীবনযাপন নিয়ে তার ভিডিওগুলো ভাইরাল হতে থাকে। এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে ইউটিউব আয়ের বড় একটি অংশ তিনি স্কুল সংস্কারে ব্যয় করতে শুরু করেন।
এই উদ্যোগে একা ছিলেন না সিরাজ। পাশে দাঁড়ান সমাজসেবক Fauzia Zaki এবং তার ভাতিজি Zehra Zaidi। তারা স্কুলের জন্য জমি কেনা থেকে শুরু করে ভবন নির্মাণের পুরো ব্যয়ভার বহন করেন। এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে গড়ে ওঠে অত্যাধুনিক এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
বর্তমানে এই স্কুলে রয়েছে আধুনিক শ্রেণিকক্ষ, মানসম্মত শিক্ষার ব্যবস্থা, কম্পিউটার ল্যাব, ক্যানটিন, খেলার মাঠ এবং নিরাপদ পরিবেশ। গ্রামের শিশুরা এখন আধুনিক শিক্ষার স্বপ্ন দেখতে পারছে, যা একসময় ছিল তাদের জন্য কল্পনার মতো।
এক ভিডিও বার্তায় সিরাজ বলেন—
“যে কাজই করেন, নিয়ত পরিষ্কার রাখুন। আল্লাহ সফলতা দেবেন। তবে সবসময় মনে রাখবেন, অন্যদের জন্য কিছুটা হলেও সহজ বা ভালো কিছু করতে হবে।”
২০২৪ সালের শুরুতে ভাইরাল হওয়া সিরাজের ভিডিওগুলোতে দেখা যায়, সে গ্রামের রাস্তায় হাঁটছে, ছাগলের সঙ্গে খেলছে, উৎসব উদযাপন করছে এবং সহজ ভাষায় তার দিনলিপি শেয়ার করছে। তার ভাঙা উর্দু, হাসিমুখ ও নিষ্পাপ গল্প বলার ভঙ্গি মুহূর্তেই দর্শকদের মন জয় করে নেয়।
বর্তমানে সিরাজের Instagram-এ ২২ লাখ, Facebook-এ ২৪ লাখ এবং YouTube-এ ১৮ লাখেরও বেশি ফলোয়ার রয়েছে। ডিজিটাল মাধ্যমে খ্যাতি অর্জনের পাশাপাশি সমাজের জন্য এত বড় অবদান রাখায় তাকে এখন ‘গ্রামের ছোট্ট নায়ক’ হিসেবেও অভিহিত করা হচ্ছে।
সিরাজ ও মুসকানের এই উদ্যোগ প্রমাণ করেছে—ইচ্ছা আর চেষ্টা থাকলে বয়স কোনো বাধা নয়, এবং সঠিক কাজে প্রযুক্তিকে কাজে লাগালে বদলে যেতে পারে একটি পুরো সমাজের ভবিষ্যৎ।