থানা চত্বরে দুই স্বামীর টানাটানি এক নারীকে কেন্দ্র করে

মঙ্গলবার ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

thana chottore nari dui samier tanatani

যশোরের কোতোয়ালি থানা চত্বরে ঘটেছে চাঞ্চল্যকর এক ঘটনা। এক নারীকে কেন্দ্র করে দুই স্বামীর প্রকাশ্য টানাটানিতে পুরো এলাকা রীতিমতো অবাক হয়ে যায়। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার) দুপুরে এ ঘটনাটি ঘটে। উপস্থিত জনতা হতবাক হয়ে যান এই দৃশ্য দেখে।

ঘটনার শুরু
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরের কানাইপুর এলাকার বাসিন্দা বিকাশ অধিকারী প্রায় ৩৬ বছর ধরে স্ত্রী সীমা অধিকারীর সঙ্গে সংসার করছিলেন। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি সীমা ফরিদপুর সদরের বাসিন্দা পলাশ কুন্ডুর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। কিছুদিন আগে তিনি স্বামী-সংসার ছেড়ে পলাশের হাত ধরে ভারতে চলে যান এবং সেখানেই বিয়ে করেন।

ঘটনা এখানেই থেমে থাকেনি। সোমবার রাতে সীমা ও পলাশ যশোরে এসে একটি হোটেলে ওঠেন। খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে প্রথম স্বামী বিকাশ অধিকারী সেখানে হাজির হন। এরপর পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং একপর্যায়ে বিষয়টি গড়ায় কোতোয়ালি থানায়।

Ad Page

থানায় ধস্তাধস্তি

থানায় উপস্থিত তিনজনের মধ্যে শুরু হয় হাতাহাতি ও ধস্তাধস্তি। একদিকে দীর্ঘ ৩৬ বছরের সংসার ভেঙে যাওয়ার কষ্টে বিকাশ অধিকারীর দাবি— তিনি যেকোনো মূল্যে স্ত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে নিতে চান। অন্যদিকে সীমা অধিকারীর বক্তব্য ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন।

স্ত্রীর বক্তব্য
সীমা অধিকারী বলেন,

“আমি বিকাশের সংসারে নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। এসব সহ্য করতে না পেরে আমি পলাশকে বিয়ে করেছি। এখন আর বিকাশের সঙ্গে সংসার করব না।”

অন্যদিকে বিকাশ অধিকারীর অভিযোগ,

“সীমার পরকীয়ার কারণে আমার সাজানো সংসার ভেঙে যাচ্ছে। শুধু ঘর ছেড়ে যায়নি, নগদ টাকা আর গয়নাও নিয়ে গেছে। আমি সীমাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিতে চাই।”

পুলিশের ভূমিকা
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) কাজী বাবুল জানান,

“৯৯৯-এ কল পাওয়ার পর পুলিশ যশোরের একটি হোটেল থেকে তিনজনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। বর্তমানে তারা থানা হেফাজতে আছেন। পরিবারের সদস্যদের খবর দেওয়া হয়েছে।”

দ্বিতীয় স্বামীর দাবি
সীমার দ্বিতীয় স্বামী পলাশ কুন্ডু বলেন,

“সীমার সঙ্গে আমার তিন বছরের সম্পর্ক। আমরা দুজনেই স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছি। এখন আমরা একসঙ্গে থাকতে চাই। কিন্তু বিকাশ আমাদের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।”

স্থানীয় প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনা যশোরে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। থানার ভেতরে এভাবে দুই স্বামীর টানাটানি নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন উঠেছে। বিশেষ করে পারিবারিক কলহ, ভালোবাসার টানাপোড়েন ও সামাজিক দায়বদ্ধতা নিয়ে স্থানীয়রা নানা মত প্রকাশ করছেন।

বর্তমানে তিনজনই থানার হেফাজতে থাকলেও পুলিশ জানিয়েছে, পারিবারিক সদস্যদের ডেকে আনা হচ্ছে এবং আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

দুই বছর পর প্রবাসী বিল্লালের নিথর দেহ ফিরল গ্রামের বাড়িতে

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *