iPhone 17 উন্মোচনের পর ১১২ বিলিয়ন ডলার বাজারমূল্য হারাল Apple

শনিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

apple iphone17 market value drop

Apple তাদের বহুল প্রতীক্ষিত iPhone 17 সিরিজ উন্মোচন করেছে ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫-এ কুপার্টিনো, ক্যালিফোর্নিয়া-তে অবস্থিত অ্যাপলের প্রধান কার্যালয়ে। কিন্তু নতুন ডিভাইসের উন্মোচনের পর বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উত্তেজনার বদলে দেখা দিয়েছে তীব্র হতাশা , মাত্র দুই দিনেই অ্যাপলের বাজারমূল্য থেকে উধাও হয়েছে প্রায় ১১২ বিলিয়ন ডলার।

উন্মোচনের দিন শেয়ারদর ১.৫% এবং পরদিন আরও ৩.২৩% কমে এসে দাঁড়ায় ২২৬.৭৯ ডলারে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই দরপতন অ্যাপলের উদ্ভাবনী ক্ষমতা, লাভজনকতা এবং Artificial Intelligence (এআই) প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়া নিয়ে বিনিয়োগকারীদের গভীর শঙ্কা প্রতিফলিত করছে।

উল্লেখযোগ্য নতুনত্বের অভাব: বিনিয়োগকারীরা আশা করেছিলেন যে আইফোন ১৭ একটি যুগান্তকারী আপডেট নিয়ে আসবে। কিন্তু এতে কেবল পাতলা ডিজাইন, হালকা ওজন এবং সীমিত হার্ডওয়্যার আপডেট দেখা গেছে — যা বাজারে প্রত্যাশিত প্রভাব ফেলেনি।

এআই প্রযুক্তিতে পিছিয়ে থাকা: অ্যাপল তাদের ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট Siri-এর বড় আপগ্রেড ২০২৬ সাল পর্যন্ত পিছিয়ে দিয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী Google এবং Samsung ইতিমধ্যেই উন্নত এআই-ভিত্তিক ফোন বাজারে এনেছে, ফলে অ্যাপল এখানে বড় ব্যবধানে পিছিয়ে গেছে।

Ad Page

আগাম তথ্য ফাঁস: উন্মোচনের আগে iPhone 17 Air (অতিপাতলা মডেল) নিয়ে অনেক তথ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস হয়েছিল। এতে উন্মোচন ইভেন্টে নতুনত্বের অভাব দেখা যায় এবং দর্শকরা তেমন চমক পাননি।

শুল্ক ও মুনাফার চাপ: অ্যাপল জানিয়েছে তারা পণ্যের দাম না বাড়িয়ে নিজেরাই ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি শুল্ক বহন করবে। যদিও এটি ক্রেতাদের জন্য সুখবর, বিনিয়োগকারীরা আশঙ্কা করছেন এতে কোম্পানির লাভ কমে যাবে।

বিনিয়োগকারীদের অনাগ্রহ: ফোন উন্মোচনের দিনে শেয়ার লেনদেন কম ছিল, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থার ঘাটতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

উন্মোচনের আগে অ্যাপলের বাজারমূল্য ছিল প্রায় ৩.৫২ ট্রিলিয়ন ডলার। শেয়ারদর ৩.২% কমে যাওয়ায় বাজারমূল্য থেকে হারিয়েছে ১১২.৬ বিলিয়ন ডলার — যা প্রায় Nike-এর মোট বাজারমূল্যের সমান।

বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান যেমন Phillip Securities এবং D.A. Davidson অ্যাপলের শেয়ার রেটিং কমিয়ে দিয়েছে এবং বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কেনা থেকে বিরত থাকতে বলেছে।

Thomas Hayes, Great Hill Capital-এর বিশ্লেষক বলেন — “অ্যাপল আসলে নতুন কিছু উদ্ভাবন করছে না। তারা এআই দৌড়ে পিছিয়ে পড়েছে এবং বাজার এ নিয়ে সংশয়ে আছে।”

Tim Cook উন্মোচন করেছেন অতিপাতলা iPhone 17 Air — যা Samsung S25 Edge থেকেও পাতলা। এতে রয়েছে নতুন A19 Pro chip, টাইটানিয়াম ফ্রেম এবং উন্নত সিরামিক শিল্ড গ্লাস।

তবে মাত্র একটি ক্যামেরা এবং গুরুত্বপূর্ণ এআই ফিচার পিছিয়ে দেওয়ায় বিনিয়োগকারীরা এটিকে বড় প্রযুক্তিগত অগ্রগতি মনে করছেন না। ডিজাইন প্রশংসা পেলেও শেয়ারবাজারে প্রভাব ফেলতে পারেনি।

এই দরপতনের আগেই ২০২৫ সালে অ্যাপলের শেয়ার ৬.৪% কমে ছিল। অন্যদিকে Microsoft এবং Nvidia-এর মতো এআই অগ্রগামী প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।

বিশ্লেষকরা সতর্ক করছেন — অ্যাপল যদি দ্রুত এআই প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ না বাড়ায়, তাহলে তারা উদ্ভাবনে তাদের শীর্ষস্থান হারাতে পারে।

সাধারণ ক্রেতাদের কাছে iPhone 17 আসন্ন ছুটির মৌসুমে জনপ্রিয় হতে পারে, কিন্তু বিনিয়োগকারীদের কাছে বার্তাটি স্পষ্ট — অ্যাপলকে আবার প্রমাণ করতে হবে যে তারা এখনও উদ্ভাবনের শীর্ষে আছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *