গাইবান্ধায় নদী থেকে শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধার

প্রকাশঃ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, মঙ্গলবার

gaibandha teacher dead body 16 sep 2025

গাইবান্ধা সদর উপজেলার ঘাঘট নদী থেকে এক নারী শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় চরম শোকের ছায়া নেমে এসেছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫) দুপুরে পুলিশ নদী থেকে তাসমিন আরা নাজ (৪০)-এর মরদেহ উদ্ধার করে। তিনি গাইবান্ধা এনএইচ মডার্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা ছিলেন।

নিহত তাসমিন আরা নাজ গাইবান্ধা সদর উপজেলার পূর্ব কোমর নই মিয়াপাড়া এলাকার নাজির হোসেনের মেয়ে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিত ছিলেন এবং দীর্ঘদিন ধরে গাইবান্ধা সদর এলাকায় শিক্ষকতা করছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার ভোরে তিনি নিজ বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। পরে দুপুরের দিকে স্থানীয়রা ঘাঘট নদীতে একটি নারীর মরদেহ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয়। খবর পেয়ে গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে।

Ad Page

গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীনুর ইসলাম তালুকদার বলেন, “খবর পাওয়ার পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায় এবং মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানার জন্য ময়নাতদন্ত রিপোর্টের অপেক্ষায় রয়েছি।”

তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা (ইউডি কেস) দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। পরিবারের পক্ষ থেকেও লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত শুরু করা হবে।

নিহতের পরিবার জানায়, তাসমিন আরা মানসিকভাবে কিছুটা বিষণ্নতায় ভুগছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে তিনি কর্মস্থলে যাওয়া-আসায়ও কিছুটা অনিয়ম করছিলেন। তবে আত্মহত্যা নাকি দুর্ঘটনাবশত পানিতে পড়ে যাওয়া — তা এখনও স্পষ্ট নয়।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাসমিন আরা ছিলেন শান্ত স্বভাবের এবং এলাকার সবার প্রিয় একজন শিক্ষক। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর সহকর্মী শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং এলাকাবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।

গাইবান্ধা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তারা জানান, একজন কর্মরত শিক্ষিকার এমন অকাল মৃত্যু অত্যন্ত মর্মান্তিক। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার হলে পরবর্তী প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এই ঘটনা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট অনেকেই তার প্রতি শোক প্রকাশ করেছেন এবং মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনের দাবি তুলেছেন।

ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত পুলিশ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। বর্তমানে মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে এবং পরিবারের সদস্যরা থানায় যোগাযোগ করছেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, ঘটনার সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং প্রয়োজনে সিসিটিভি ফুটেজসহ অন্যান্য তথ্য যাচাই করা হবে। তারা জনগণকে গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।

এই মর্মান্তিক ঘটনার মাধ্যমে আবারও পরিষ্কার হয়েছে, মানসিক স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিগত জীবনের সংকট মোকাবেলায় পরিবার ও সমাজের সহায়তা অত্যন্ত জরুরি। একজন শিক্ষকের এমন আকস্মিক মৃত্যু পুরো এলাকাকে নাড়া দিয়ে গেছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *