তারিখ: সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

রংপুর জেলার তারাগঞ্জ উপজেলায় ঘটে গেছে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। মাত্র পাঁচ মাস বয়সী কন্যাশিশুকে গলা কেটে হত্যা করেছেন তারই মা তুলসী রানী। সোমবার ভোরে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নর পলাশবাড়ি গ্রামএ এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশুটি বাবুলাল ও তুলসী রানী দম্পতির দ্বিতীয় কন্যা। স্থানীয় সূত্র জানায়, ভোরে শিশুটি কান্নাকাটি করায় দাদি পাতানী রানী তাকে দুধ খাওয়ানোর জন্য মায়ের হাতে তুলে দেন। কিছুক্ষণ পর শিশুটিকে ঘরে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন তুলসী রানী। এরপর রক্তাক্ত দেহ স্বামী বাবুলালর হাতে তুলে দেন তিনি।
এ সময় দাদি পাতানী রানী চিৎকার করলে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে ঘাতক মাকে আটক করে রাখেন।
নিহত শিশুর বাবা বাবুলাল জানান, “মাসখানেক ধরে স্ত্রী অসুস্থ ছিলেন, তাই মায়ের কাছেই থাকত শিশু। আজ ভোরে কান্না করায় স্ত্রীর হাতে দিয়েছিলাম দুধ খাওয়ানোর জন্য। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সব শেষ।”
দাদি পাতানী রানী বলেন, “৫-৬ দিন ধরে নাতনী আমার কাছেই ছিল। সকালে কান্না করছিল, তাই বউকে দেই দুধ খাওয়াতে। কিছুক্ষণ পর দেখি ছেলে হাতে করে গলাকাটা বাচ্চা নিয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছে।”
এদিকে ঘটনার পর আটক তুলসী রানী গণমাধ্যমের সামনে অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন।
প্রতিবেশীরা জানান, তুলসী রানী শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন এবং মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় এই ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারেন। তার ভাই মানিক মিয়া বলেন, “আমার বোন সন্তানদের খুব ভালোবাসে। কিন্তু অসুস্থ থাকলে মানুষ স্বাভাবিক থাকে না। সুস্থ থাকলে এ কাজ কোনোদিন করত না।”
সবিত্রী সেন নামের কুর্শা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য বলেন, “ঘটনাটি খুবই মর্মান্তিক। শুনেছি নিহত শিশুর মা মানসিক রোগে ভুগছিলেন।”
এম এ ফারুক নামের তারাগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, “ঘাতক মাকে আটক করা হয়েছে। তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। স্বজনেরা জানিয়েছেন, তিনি মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন।”
বর্তমানে তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন।